অধ্যাপক রিতা খন্দকারের মানবিকতা নজর কেড়েছে শিক্ষার্থীদের
এইচ এম ইমরান হোসাইন
|
![]() অসুস্থ শিক্ষার্থীর পাশে অধ্যাপক রিতা খন্দকার সবাই তখন পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে ব্যস্ত। এমন অবস্থায় হাজারো ব্যস্ততা ছাপিয়ে শিক্ষার্থীর পাশে ছুটে এসে মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন সরকারি তিতুমীর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিতা খন্দকার। জানা গেছে, শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই তিতুমীর কলেজের মূল ফটকে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এমন অবস্থায় অধ্যাপক রিতা খন্দকার এসে শিক্ষার্থীকে প্রাথমিকভাবে মাথায় পানি এবং স্যালাইন পান করিয়ে পরীক্ষায় বসানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীর অবস্থা খারাপ দেখে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন তিনি। পরে পুলিশের সহায়তায় নিজেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন শিক্ষার্থীকে। এবিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক রিতা খন্দকার দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি কলেজে বিসিএস পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলাম। হঠাৎ বিএনসিসির শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে পারি বিসিএস পরীক্ষা দিতে আসা এক শিক্ষার্থী কলেজের মূল ফটকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে। তখন আমি ইমরান নামের ওই শিক্ষার্থীর কাছে গিয়ে দেখি প্রচুর বমি হচ্ছে তার। পরে তাকে প্রাথমিকভাবে মাথায় পানি ঢেলে স্যালাইন খাওয়ায়ে সুস্থ করে পরীক্ষায় বসানোর চেষ্টা করি। কিন্তু অবস্থা খারাপ দেখে ৯৯৯-এ ফোন করি। পরে শিক্ষার্থীকে পুলিশের সহায়তায় গাড়িতে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। পরে ৭০১ নাম্বার রুমে তাকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলেও জানান তিনি। রিতা খন্দকার বলেন, আমি যখন তিতুমীর কলেজ থেকে ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে ঢামেকে যাই, তখন বিএনসিসির দুজন শিক্ষার্থী ছাড়া কেউ আমার সঙ্গে ছিলো না। ব্যস্ততার মধ্যে কেউ এগিয়ে আসতে পারেনি। তবে আমি নিজের সন্তান মনে করে চেষ্টা করেছি নিজ উদ্যোগে এই শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়াতে। এবিষয়ে বিএনসিসি ক্যাডেটের শামীম ইমতিয়াজ বলেন, আজ সরকারি তিতুমীর কলেজে বিসিএস পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলাম। হঠাৎ দেখি এক পরীক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে তাকে আমার সহযোদ্ধা (বিএনসিসি ক্যাডেট) সহ ধরে কলেজে একটি কক্ষে রাখা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিতা খন্দকার ম্যামের আন্তরিক সহযোগিতায় পুলিশের গাড়িতে করে তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তিনি বলেন, রিতা খন্দকার ম্যামের আন্তরিকতা সত্যি আমাকে অবাক করেছে। মানবতার এমন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবং গভীর আন্তরিকতা দেখে রিতা খন্দকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিতুমীর কলেজের বিভিন্ন সংগঠন এবং শিক্ষার্থীরা। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মামুন সোহাগ বলেন, অধ্যাপক রিতা খন্দকার ম্যামের এমন আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। এমন আচরণ শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। শিক্ষার্থী রাব্বি হোসেন বলেন, রিতা খন্দকার ম্যামের এমন ভালোবাসা শিক্ষার্থীরা আজীবন মনে রাখবে। শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসাইন নিশাদ বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতি ম্যামের এমন আন্তরিক আচরণ প্রতিটি শিক্ষার্থীদের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। স্বদেশপ্রতিদিন/ইমরান
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |