কাঁচা বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে অস্থিরতা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। কখনও দাম সামান্য কমলেও কয়েক দিনের মধ্যেই আবারও বেড়ে যায়। উচ্চ মূল্যের বাজারে বেহাল অবস্থা সাধারণ মানুষের, প্রতিনিয়তই বাজারে এসে হিমশিম খেতে হয়। কাঁচা মরিচের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকা বেড়ে প্রকারভেদে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি সবজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। দাম বেড়েছে মাছ ও পেঁয়াজের।
ক্রেতাদের অভিযোগ, উচ্চমূল্যের কারণে অনেকেই চাহিদা মতো প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছেন না। আর চড়া দামের জন্য বিক্রেতারা দুষছেন বৃষ্টিকে। তারা বলছেন, চাহিদা মতো কাঁচা শাকসবজি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাড়তি দামে এনে বিক্রি করতে হচ্ছে।
শনিবার মিরসরাইয়ের বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, শাক-সবজিসহ আলু-পেঁয়াজ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যই বিক্রি হচ্ছে উচ্চ দামে। এতে বাজার করতে আসা ক্রেতাদের মধ্যে দেখা গেলো অসন্তোষ। তারা বলছেন, বাজারে সবজিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে সব ধরনের শাকের দাম। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, বছরখানেক আগেও ১০ টাকা থেকে ২০ টাকার মধ্যে সব ধরনের শাকের আঁটি পাওয়া যেতো। কিন্তু এখন তা পাওয়া অসম্ভব ।
শনিবার বাজারে প্রতি আঁটি লাউ শাক বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। সবজি বিক্রেতা ফারভেজ বলেন, বৃষ্টির কারণে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে গত সপ্তাহ থেকে আজ বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজিই বিক্রি হচ্ছে উচ্চমূল্যে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকায়, শসা ৫০-৬০ টাকা, কাঁকরোল ১০০টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ১২০ টাকা, বরবটি ৮০- টাকা, কচুর লতি ৬০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৭০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা এবং লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা করে। আরেক শাক বিক্রেতা মহিউদ্দিন বলেন, ‘এখন বর্ষাকাল, সবদিকে পানি। আড়তে ঠিকমতো মাল আসে না। তাই দাম বেশি।’
পেঁয়াজের দাম শতক ছাড়িয়েছে : বাজারে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম ১০০ ছাড়িয়েছে। আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট সাইজের পেঁয়াজ ১০০ টাকা এবং বড় সাইজের পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আজ আলু ৬০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, আদা ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি নয় মাছ বাজারও অস্থির, রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৬০-৬০০ টাকা কেজি দরে, কাতল মাছ ৪০০-৫৫০ টাকা,চিংড়ি মাছ ১০০০-১৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ২০০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কিছু টা কমে ১৫৫ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে আর বিভিন্ন দোকানে ডিম ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।
এ সময় সবজি কিনতে আসা ক্রেতা আবু নছর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাদের (বিক্রেতা) কথা শুনলে মনে হয় আমাদের দেশে সারা বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগ, হয় বন্যা, না হয় বৃষ্টি কিংবা গরম; কোনো না কোনও অজুহাত লেগেই থাকে। দাম বেশি কেন জানতে চাইলে তারা মুখস্থ একটা কথা বলে দেয়।
স্বদেশ প্রতিদিন/এমআর