রবিবার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
রাজনৈতিক অঙ্গণে নির্বাচনের হাওয়া বইছে
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কতটা প্রস্তুত বিএনপি
উমর ফারুক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:২৩ AM
# দল গোছাতে তৃণমূলে কেন্দ্রীয় নেতারা
# নিজ নির্বাচনী এলাকায় সম্ভাব্যপ্রার্থীরা

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা গণঅভুত্থানে ভারতে পালিয়ে যান স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরু হয়। সরকারকে সর্বাত্নক সহযোগিতা করে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্ত ,একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখে পরে সরকার। এই সংকটগুলো নিরসনের জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করে বিএনপি। সরকার রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের ধারনা দেয়। মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের রোডম্যাপ স্পষ্ট করে বলেন, আগামী ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা এটা আলোকপাত করেছেন। নির্বাচন হচ্ছে ২০২৬ সালের  ৩০ জুনের মধ্যে। এর আগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে  জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, অল্প কিছু সংস্কার করে ভোটার তালিকা নির্ভুলভাবে তৈরি করার ভিত্তিতে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয়। তাহলে ২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়তো সম্ভব হবে। তবে, নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে বিএনপির যে প্রত্যাশা ছিল তা পূরণ হয়নি জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নির্বাচনের জন্য ৪ থেকে ৬ মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।

এদিকে,সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক অঙ্গণে হঠাৎ করেই নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়। প্রতিটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ভাবনা শুরু করেছে। দল গোছানোর পাশাপাশি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ভোটের মাঠ সাজাচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড। আগামী সংসদ নির্বাচন ঘিরে নিজ নিজ এলাকায় সক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। নির্বাচনের আগে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সক্রিয় করতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাঝে-মধ্যে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বিভিন্ন জেলা-উপজেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিটি সংসদীয় এলাকার সম্ভাব্য প্রার্থীদের সম্পর্কেও খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। আসন্ন নির্বাচনে শতাধিক আসনে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের প্রাধান্য দিতে চান তারেক রহমান। এরই মধ্যে বিভিন্ন আসনে তরুণ নেতাদের নির্বাচনের বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দিয়েছেন তিনি। সম্ভাব্যপ্রার্থীদের আমলনামা যাচাই-বাচাই করে প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন বলে জানা গেছে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দল গোছানোর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে তৃণমূলের কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এজন্য ঢাকা ছাড়া ৯টি সাংগঠনিক বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ৯ জন সিনিয়র নেতাকে। এ ছাড়া রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা এবং তারেক রহমানের ইতিবাচক রাজনীতির বার্তা নিয়ে সারা দেশ সফর করছে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। ৩১ দফা নিয়ে বিভাগ জেলা ইউনিটে ধারাবাহিক কর্মশালা করছে বিএনপি। ওই কর্মশালায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তিনি বক্তব্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নির্দেশনা দেন। এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরাও তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় সভা সমাবেশসহ নানা সেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ইসলামী মাহফিলেও যোগ দিচ্ছেন দলের নেতারা। বিএনপি ইতিবাচক কর্মকাণ্ড ও চিন্তাভাবনা তুলে ধরার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে ধানের শীষের প্রতীক তুলে দিয়ে কৌশলে প্রচার চালাচ্ছেন।

যেসব নেতা নিজ নির্বাচনী এলাকায় কাজ করছেন তারা হলেন, ঢাকা ৪ আসনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, ঢাকা-১১ (বাড্ডা-ভাটারা-রামপুরা) আসনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্ষুদ্র ঋণবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ্ব ড. এম এ কাইয়ুম,  ঢাকা -১২ আসনে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহবায়ক সাইফুল ইসলাম নিরব, ঢাকা ১৩ (মোহাম্মদপুর-আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার একাংশ) বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক ছাত্রনেতা আতাউর রহমান ঢালী, ঢাকা-১৫ (মিরপুর-কাফরুল) আসনে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা মামুন হাসান। ঢাকা ১৮ আসনে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ঢাকা ২০ (ধামরাই) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মহিলা বিষয়ক সহ সম্পাদক ও  জাতীয়তাবাদী মহিলাদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক সুলতানা আহমেদ।

কক্সবাজার -১ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, ভোলা ১ আসনে - ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর, ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর অব.হাফিজ ও যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক আনোয়ার চৌধুরী, খুলনা ৩ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যশোর-৩ আসনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, মিজানুর রহমান সিনহা, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, ফেনী-৩ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সাবেক ১নং সহ-দপ্তর সম্পাদক ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল লতিফ জনি, বাগেরহাট-৩ (মোংলা-রামপাল) আসনে বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের একাংশ) আসনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) বিএনপির সহযোগী সংগঠণ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্মআহবায়ক বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, বাগেরহাট -৪ (শরনখোলা-মোড়লগঞ্জ) আসনে বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেটে ফারহানা জাহান নিপা, যশোর -৪ (বাগারপাড়া অভয়নগর ও বসুন্দিয়া ইউনিয়ন) আসনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেকসহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-তথ্যগবেষণা সম্পাদক মো. রজিবুল ইসলাম। বগুড়া ৫- (শেরপুর-ধুনট) আসনে বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন রংপুর-২ (তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ) আসনে রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. মাহফুজ উন নবী ডন।

লালমনিরহাট ৩ আসনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু,  কুড়িগ্রাম ১ আসনে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা মনিরুল ইসলাম রয়েল, কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক সভাপতি ও সদস্য সচিব মো: আব্দুল হালিম মিন্টু। কুড়িগ্রাম ৩ আসনে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, বিএনপি চেয়ারপারসন ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটি সদস্য তাজভীরুল ইসলাম, বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক। গাইবান্ধা ৪ আসনের বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) মো: আমিনুল ইসলাম। 

নাটোর-১ আসনে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী বায়েজিদ একাংশ) আসনে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে তথ্য ও গবেষণা সহ-সম্পাদক সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী। বরিশাল-৫ (সদর) আসনে আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ,সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম সারওয়ার, পটুয়াখালী-২ থেকে দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন সিলেট-৩ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ মালেক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর)  আসনে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি রাজীব আহসান চৌধুরী পাপ্পু,  নেত্রকোনা-১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল,সিরাজগঞ্জ ২ আসনে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু ও জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান ও নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা মো. আসফ কবীর চৌধুরী শত।

এদিকে, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌর, থানা কমিটি থেকে শুরু করে মহানগর ও জেলা কমিটি সম্মেলন ও কাউন্সিলের মাধ্যমে আগামী ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। আগামী ৩ মাসের মধ্যে সব পূর্ণাঙ্গ কমিটি শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে দলটির হাইকমান্ড। এজন্য ঢাকা ছাড়া ৯টি সাংগঠনিক বিভাগে ৯ সিনিয়র নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে কার্যক্রমও শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের নেতাদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। সব কমিটিতে বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে ছিলেন এমন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে।

দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন, রংপুর বিভাগে ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, রাজশাহী বিভাগে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিলেট বিভাগে স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, ময়মনসিংহ বিভাগে যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, খুলনা বিভাগে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, কুমিল্লা বিভাগে ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, বরিশাল বিভাগে ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চট্টগ্রাম বিভাগে ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান ও ফরিদপুর বিভাগে ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন।

সূত্রমতে, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশে রাজনীতি করেছে বিএনপি। দীর্ঘ সময়ে প্রতিকূল পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে বিএনপির ৮২ সাংগঠনিক জেলার অধিকাংশ কমিটি ঢাকা থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে যেখানে কমিটি আছে, তার অধিকাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ। আবার যেসব আহ্বায়ক কমিটি আছে; তার মেয়াদ ৩ অথবা ৬ মাস দেওয়া হলেও বছরের পর বছর পার করছে। 

সূত্রমতে, বিএনপির ৮২ সাংগঠনিক জেলার বেশিরভাগই আহ্বায়ক কমিটি। এছাড়া তৃণমূল পর্যায়ের অনেক জায়গায় আহ্বায়ক কমিটি আছে, অনেক জায়গায় কমিটিই নেই। সেখানে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি করা হবে। আবার অনেক কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ, সেখানেও কাউন্সিল করে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। এসব কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে বলা হয়েছে। তবে কিছু কিছু সাংগঠনিক এলাকার কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও নেতৃত্ব শক্তিশালী ও সক্রিয়, সেসব কমিটি নিয়ে তাড়াহুড়া করতে চায় না দলটি। অর্থাৎ সেই কমিটি এখনই নতুন করে করার চিন্তা করছে না দলটির হাইকমান্ড।

নয় বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মধ্যে রংপুর বিভাগে দায়িত্বপাওয়া ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর কাছে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রংপুরের দায়িত্ব পাওয়ার পর লালমনিরহাটে একটি বৈঠক করেছি। আর বৈঠক হবে। এরপর সাংগঠনিক সংকট নিরসনের জন্য প্রয়োজনে আমরা উপজেলা পর্যায়ে যাব। তবে, প্রতিটি ইউনিট কমিটি হবে কাউন্সিলের মধ্যদিয়ে। এতে যোগ্য নেতারা মুল্যায়িত হবেন। 

অষ্টম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ক্ষমতা ছাড়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। এরপর দীর্ঘ দেড় যুগ ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। ওয়ান-ইলেভেনের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি পরাজিত হয়। এরপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে। তাই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। তবে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিলেও আওয়ামী লীগ সরকারের কৌশলের কারণে পরাজিত হয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে ওই নির্বাচনে দিনের ভোট আগের দিন রাতেই (২৯ ডিসেম্বর) হয়ে যায় বলে বিএনপি অভিযোগ তোলে। আর সর্বশেষ এ বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। এমনকি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আহ্বাবে সাড়া দিয়ে ৬২টি রাজনৈতিক দল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে একতরফা ও ডামি আখ্যা দিয়ে তা বর্জন করে। ফলে বিএনপিবিহীন এবং বয়কট হওয়া এই নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে চরম বেকায়দায় পড়ে আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি সমমনা দলগুলোকে নিয়ে নতুন উদ্যমে আন্দোলন শুরু করে। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় দেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান।

স্বদেশ প্রতিদিন/এমআর

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






● সর্বশেষ সংবাদ  
● সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
অনুসরণ করুন
     
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড -এর পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক আবরণ প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।
ফোন: +৮৮০২-৮৮৩২৬৮৪-৬, মোবাইল: ০১৪০৪-৪৯৯৭৭২। ই-মেইল : e-mail: swadeshnewsbd24@gmail.com, info@swadeshpratidin.com
● স্বদেশ প্রতিদিন   ● বিজ্ঞাপন   ● সার্কুলেশন   ● শর্তাবলি ও নীতিমালা   ● গোপনীয়তা নীতি   ● যোগাযোগ
🔝