ভবিষ্যতে কোনো সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য অন্য দেশের দালাল হলে তাদের পরিণতি ‘খুনি হাসিনার মতো’ হবে বলে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে যে নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠছে, তা নতজানু পররাষ্ট্রনীতি মেনে নেবে না।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) কুড়িগ্রাম জেলার কলেজ মোড় থেকে শুরু হওয়া ‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচি শেষে নাগেশ্বরীর নাখারগঞ্জ বাজারে আয়োজিত সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি দেন সারজিস আলম। লং মার্চটি শেষ হয় রামখানা ইউনিয়নের নাখারগঞ্জ গ্রামে, ফেলানীর বাড়িতে গিয়ে।
এসময় সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ করে তিনি বলেন , সীমান্তে আর কোনো ভাই বা বোনের লাশ কাঁটাতারে ঝুলতে দেখলে তা রুখতে তাঁরা আরও ব্যাপক লং মার্চের আয়োজন করবেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এমন কোনো মার্চ আয়োজন করলে সেটি কাঁটাতারের সীমা পেরিয়ে যতদূর সম্ভব এগিয়ে যাবে।
পৃথিবীর সব দেশকে উদ্দ্যেশ্য করে তিনি বলেন, সীমান্ত হত্যার নামে কাঁটাতারের যে দমননীতি চালু হয়েছে, তা রুখতে আমাদের আন্দোলন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা বাংলাদেশের সীমান্তে আর কোনো লাশ দেখতে চাই না। এর আগে যেসব নাগরিককে সীমান্তে হত্যা করা হয়েছে, তাদের বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে করতে হবে।'
লং মার্চের শুরুতে সারজিস আলম সীমান্ত হত্যার বিচার, মরণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ, শহীদ ফেলানীর নামে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনের নামকরণ, নতজানু পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তে সাম্যের ভিত্তিতে নতুন পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ এবং কুড়িগ্রামের চরের উন্নয়নে নদী সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন।
লং মার্চে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দফতর সম্পাদক জাহিদ আহসান, সমন্বয়ক রকিব মাসুদসহ বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। ফেলানীর বাবা নুর ইসলামও কর্মসূচিতে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, ফেলানী হত্যার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো এর বিচার হয়নি। সারজিস আলমের এই বক্তব্য সীমান্ত হত্যার বিচার আদায়ের জন্য জনগণের মধ্যে নতুন করে সাড়া ফেলেছে।