
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে গঠিত হতে যাওয়া নতুন এই দলটি নিয়ে দেশের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা মন্তব্য করেছেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ দলের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, আবার কেউ কেউ নতুন দলটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে বেশিরভাগ নেতাই নতুন দলের সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সংযোগ থাকার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নতুন দলটির প্রতি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, "নাহিদ ইসলাম সরকার থেকে পদত্যাগ করে নতুন দলের দায়িত্ব নেবেন। নতুন পথচলায় তাকে অভিনন্দন জানাই। তবে এটা সুস্পষ্ট যে, নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়ায় নাহিদ ইসলাম সরকারে থাকার সময়ও যুক্ত ছিলেন। সুতরাং, নাহিদ ইসলামের পদত্যাগের পরও সরকার নিরপেক্ষ থাকবে না।"
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম নতুন দল গঠন নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, "ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টাতে যাওয়া, তারপর পদত্যাগ করে নতুন দল গঠন করে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। তারা কী আসলে সরকার পরিচালনা করবেন, না সুন্দর নির্বাচন করবেন, না রাষ্ট্রের সংস্কার করবেন, নাকি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দল গঠন করছেন—এ বিষয়ে জনগণ স্পষ্ট বার্তা পাচ্ছে না।"
ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড জানান, “ছাত্রদের একাংশের নেতৃত্বে নতুন দল গঠনকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে ক্ষমতার ছায়ায় থেকে দল গঠনকে মানুষ ভালো চোখে দেখে না।”
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায় নতুন দলের ভূমিকা সম্পর্কে বলেন, "রাজনীতি বা দল গঠনের অধিকার সবার আছে, এটিকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে যে উপদেষ্টাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পরিবর্তে অরাজকতা ও মবতন্ত্র কায়েম হয়েছে, তাদের নেতৃত্বাধীন একটি দল গণতন্ত্রের জন্য কী ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে, তা বলা মুশকিল।"
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহিন শাহরিয়ার রেজা নতুন দলটি নিয়ে মন্তব্য করেন, “নতুন রাজনৈতিক দলকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা আশা করি তারা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে তাদের পথ পরিক্রমা নির্ধারণ করবে। তবে নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েই নতুন দলের দায়িত্ব নিয়েছেন, যা পরিষ্কারভাবে দেখায় যে তিনি সরকারের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে দল গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন। আমরা নতুন দলটিকে ‘কিংস পার্টি’ বললেই ভুল হবে না।”
নতুন রাজনৈতিক দলের বিষয়ে সবার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও, তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রভাব এবং ভূমিকা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
স্বদেশ প্রতিদিন/এমআর