আন্দোলনের বাতি ১৭ বছর জ্বালিয়ে রেখেছিল বিএনপি: ড. এম এ কাইয়ুম

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. এম এ কাইয়ুম বলেছেন, গত ১৭ বছর স্বৈরাচার শাসক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের বাতি জ্বালিয়ে রেখেছিল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আর এ কারণে জুলাই-আগষ্টে ছাত্রজনতার আন্দোলন সহজ হয়েছে। ৫ আগষ্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারিনী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। তাই আন্দোলনের বাতি জ্বালিয়ে রাখা বিএনপি জনগণের কাছে আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না।
বুধবার রাজধানীর রামপুরা হাজীপাড়া ইকরা মসজিদ মাঠে রামপুরা থানা বিএনপির কর্মীসভা ও রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফার কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্রদের নতুন দল গঠন প্রসঙ্গ তিনি বলেন, যে কেউ নতুন দল গঠন করতে পারে। রাজনীতি করতে পারে। এতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু দলগঠনের নামে কিংস পার্টি গঠন করা হয়, আর আগামীদিনের নির্বাচনে শেখ হাসিনার মত মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে যদি কোনো ষড়যন্ত্র করা হয় তাহলে বিএনপি নেতাকর্মীরা বাংলার জমিনে তা সফল হতে দেবে না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপির প্রতি মানুষের মনে যে আশা আকাঙ্খার জায়গা তৈরি হয়েছে, চাঁদাবাজি দখল ও নির্যাতন করে তা নস্ট করবেন না। মানুষের মনে কোন আঘাত দেবেন না। দলের ইমেজ বিনষ্ট করবেন না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সবকিছু খোঁজ খবর রাখছেন। মনে রাখবেন দু’একজন চাঁদাবাজি দখলবাজদের দায় নেবে না বিএনপি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমিনুল হক বলেছেন, একটি গোষ্ঠী ক্ষমতার মোহে নিজেরা স্বৈরাচারের মত কথা বলছে। স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে কথা বলছে।
তিনি বলেন,শেখ হাসিনার বিচারের সাথে জাতীয় নির্বাচনের কোন সম্পর্ক নাই।সংষ্কারের নাম করে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনী ব্যবস্হাকে পেছানোর সুযোগ নেই। ভূল পথে গেলে বাংলাদেশের জনগণ কাউকে ক্ষমা করবে না, স্বৈরাচারের মত অবস্থায় পরতে হবে।
দেশকে স্থিতিশীল করতে হলে নির্বাচনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করে আমিনুল হক বলেন,দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে সক্ষম হবে এবং নির্বাচিত সরকারই দেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
এ সময় আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রমান করেছে তারা ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার যুদ্ধের মাধ্যমে পাক হানাদার বাহিনীকে তাড়িয়েছিল। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়েছে। আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করে শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করেছি।
এসময় তিনি বলেন স্বৈরাচারের দোসররা বাংলাদেশে বসে বিদেশি প্রভুদের সহযোগিতা নিয়ে তারা বাংলাদেশের ভিতরে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে চায়।
এসময় তিনি আরো বলেন,বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে এদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করব। কোনো অবস্থাতেই এই অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দিবো না।
রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী স্বৈরাচার সরকার সিন্ডিকেট করে দেশের জিনিসপত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে বৃদ্ধি করে রেখেছিল। এখন পর্যন্ত সেই আওয়ামী সিন্ডিকেটগুলো দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।
রামপুরা থানা বিএনপির আহবায়ক হেলাল কবির হেলুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল করিম (বড় মিয়া) এর সঞ্চালনায় কর্মশালায় এসময় বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, মহানগর উত্তর বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, আকতার হোসেন, আতাউর রহমান, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, এম কফিল উদ্দিন আহমেদ, হাজী মো. ইউসুফ, আফাজ উদ্দীন, তহিরুল ইসলাম, শাহআলম, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর সদস্য এজিএম শামসুল হক, সোহেল রানা ভূঁইয়া, মাহবুব আলম ভূঁইয়া শাহিন, জাহাঙ্গীর মোল্লা, ডা. একেএম কবির আহমেদ রিয়াজ, নুরুল হুদা ভূঁইয়া নূরু, হাজী নাসির উদ্দীন, এম এস আহমাদ আলী, জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, রামপুরা থানা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নিলুফা ইয়াসমীন নিলু ও ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ।
স্বদেশ প্রতিদিন/এমআর