
গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধের লক্ষ্যে সরকার ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। ইতোমধ্যে ছয়টি কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনের প্রতিবেদনের সঙ্গে এসব রিপোর্টের মিল পাওয়া গেছে। এই কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার অফিসের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
বুধবার (৫ মার্চ) জেনেভায় অনুষ্ঠিত ‘চার্টিং দ্য পাথ ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
এই সময় সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের তৈরি তথ্যচিত্র ‘যাত্রাবাড়ী: অ্যান এভিডেন্স টু ম্যাসাকার’ প্রদর্শিত হয়, যা জুলাই-আগস্টে সংঘটিত সহিংসতার প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরে। নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই, আহতদের চিকিৎসা প্রদানকারী স্থপতি ফারহানা শারমিন ইমু, এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
আসিফ নজরুল বলেন, “জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনের প্রতিবেদনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং আমরা তাদের সুপারিশগুলো আমাদের সংস্কার কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করছি। আমরা জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার অফিসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি, এবং ইতোমধ্যে খসড়া টেক্সটেও সম্মত হয়েছি।”
একই সময়, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল মন্তব্য করেন, আওয়ামী লীগ আমলে নির্যাতন করা হয়েছে এবং এসব সহিংসতার কিছুটা রাজনৈতিক চক্রান্তের ফলস্বরূপ হয়েছে। তিনি জানান, হামলার শিকার বেশিরভাগই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ, এবং নির্দিষ্টভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বিষয়টি সঠিক নয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক তার বক্তব্যে বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য ছিল প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা। আমরা বিশ্বাস করি, সাবেক সরকারের কর্মকর্তারা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংঘবদ্ধভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।” তিনি বলেন, তিনি নিজে বাংলাদেশে হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন এবং সেখানে তরুণ, শিশু ও নারীদের ওপর নির্যাতন ও অত্যাচারের চিত্র নিজে দেখেছেন।
ভলকার টুর্ক আরও বলেন, “জাতিসংঘ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সংশোধনে সহায়তা দিতে প্রস্তুত, এবং আমরা যথাযথ সহায়তা ও কারিগরি সাহায্য দিতে চাই।”
স্বদেশ প্রতিদিন/এমআর