প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ, ২০২৫, ৯:২৩ পিএম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ক্যাম্পাসজুড়ে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সহজ করতে পরীক্ষামূলকভাবে ইলেকট্রনিক কার্ট চালু করা হচ্ছে। ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের চলাচলে যে দুর্ভোগ তৈরি হয়েছিল, তা লাঘব করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রায় ৭০০ একরজুড়ে বিস্তৃত হওয়ায় এক ভবন থেকে আরেক ভবনে কিংবা হল থেকে ক্লাসে যাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য হাঁটা বেশ সময়সাপেক্ষ ও কষ্টকর। বর্তমানে ক্যাম্পাসে প্যাডেলচালিত রিকশা থাকলেও তা সংখ্যা ও খরচের দিক থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য যথেষ্ট সহায়ক নয়। এ কারণে বিকল্প ও টেকসই সমাধান হিসেবে পরিবেশবান্ধব ‘কার্ট গাড়ি’ চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতি ও উপ উপাচার্য প্রশাসন (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ জানান, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি চালিত পরিবেশবান্ধব ১২ আসন বিশিষ্ট ফোর-হূইলার দূর নিয়ন্ত্রিত এই ইলেকট্রিক গাড়িগুলো শীঘ্রই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলা শুরু করবে। আমরা ১৫ মার্চ থেকে প্রথমে ৫টি গাড়ি দিয়ে আমাদের শাটল বাস সার্ভিস করতে পারব বলে দৃঢ় আশাবাদ রাখছি। ধীরে ধীরে বাসের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের হলগুলো থেকে যাত্রা শুরু করে বিভিন্ন অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোতে এবং লাইব্রেরীতে শিক্ষার্থীদেরকে পৌঁছে দেবে। এই বাস সার্ভিস সম্পূর্ণভাবে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে পরিচালিত হবে। সে লক্ষ্যে অতি দ্রুত আমরা চুক্তি সম্পন্ন করব।
এই কার্টগুলো দেখতে অনেকটা গলফ কার্টের মতো হলেও আকারে বড় এবং পরিবহন ও টহল কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হয়। বিদ্যুৎচালিত হওয়ায় এটি পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি-সাশ্রয়ী ও তুলনামূলক কম খরচে পরিচালনা করা সম্ভব। দ্রুত চার্জ হওয়ার কারণে দীর্ঘ পথ চলতেও কোনো সমস্যা হয় না।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় প্রাণ হারানোর পর প্রশাসন ক্যাম্পাসে এ ধরনের যান নিষিদ্ধ করে। ফলে শিক্ষার্থীদের চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয়। শাটল বাস চালু করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়, ফলে অনেক শিক্ষার্থীকে দীর্ঘ পথ হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। বিশেষ করে শারীরিকভাবে অক্ষম শিক্ষার্থীদের জন্য এটি আরও বেশি ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিক্ষার্থীদের এই সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইলেকট্রনিক কার্ট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী প্রশাসন।
স্বদেশ প্রতিদিন/এনআর