গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতন, ওভারটাইম ও ঈদ বোনাসের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএসআইএস কারখানার শ্রমিকরা। এ ছাড়া শ্রমিক মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকে গ্লোবাস কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এতে দুই মাহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রী।
শ্রমিকদের দাবি, তাদের দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে, যা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন না দেওয়ায় তারা সড়ক অবরোধে বাধ্য হন।
এদিকে, মহাব্যবস্থাপক (মানব সম্পদ ও প্রশাসন) বিএইচ আই এস এ্যাপারেল্স লি: তারিখ: ১১-০৩-২০২৫ কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখা লেখা আছে,
এতদ্বারা অত্র কারখানার সকল কর্মী ও কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, গত ১০/০৩/২০২৫ইং তারিখ অনুমান সকাল ১০.০৫ ঘটিকার সময় কর্মী ও কর্মচারীগণ নিয়ম বর্হিভূত ভাবে কাজ বন্ধ করে কারখানার অভ্যন্তরে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। কর্মী ও কর্মচারীগণকে কাজে যোগদানের জন্য বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কর্মী ও কর্মচারীগণ কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকে। কর্মী-কর্মচারীগণের এই ধরনের আচরণ অবৈধ ধর্মঘটের সামিল। কর্তৃপক্ষ মনে করছে উচ্ছৃঙ্খল কর্মী-কর্মচারীগণ কারখানাতে যে কোন ধরণের নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে।
এমতাবস্থায়, কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ শ্রম-আইন ২০০৬ এর ১৩(১) ধারা মোতাবেক ১১/০৩/২০২৫ইং তারিখ হতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষনা করল।
পরবর্তীতে কারখানা খোলার অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি হলে কারখানা খোলার তারিখ যথারীতি নোটিশের মাধ্যমে জানানো হবে। প্রকাশ থাকে যে, সিকিউরিটি ও অন্যান্য জরুরী সেবা প্রদানকারীগণ উক্ত বন্ধের আওতা বহির্ভূত থাকবে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, তাদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এ ছাড়া ওভার টাইম ও ঈদ বোনাসের টাকাও তারা পাননি। শ্রমিকরা বলেন, এ বিষয়ে আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার অনুরোধ করেছি, কিন্তু তারা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার মৌচাকের গ্লোবাস কারখানায় কয়েকজন শ্রমিককে ডেকে নিয়ে মারধর করে স্টাফরা। এরপর শ্রমিকরা কারখানার ভেতর আন্দোলন শুরু করেন। পরে ঝামেলা মিটে গেলেও আজ পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রয়েছে। এ কারণেই আজ বিক্ষোভ শেষে মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।
গ্লোবাস কারখানার শ্রমিকরা বলেন, আমাদের কারখানার শ্রমিককে অফিসে ডেকে নিয়ে স্টাফরা মারধর করেন। সেদিন আমাদের পক্ষ থেকে কর্মবিরতি ও কয়েকটি দাবি জানাই। দাবিগুলো মানলেও এরপর থেকে আর কারখানা খুলছে না এবং শ্রমিক মারধরের বিচারও করছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ।
স্বদেশ প্রতিদিন/কেএইচ