প্রকাশ: সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ১২:৪০ AM

আধুনিকতার ছোয়া বদলে যাওয়া বিশ্বে কিছু মানুষের জীবন আগের মতোই রয়ে গেছে। প্রযুক্তি যেভাবে কঠিন কাজগুলো সহজ করে দিচ্ছে, ঠিক সেভাবেই কিছু মানুষের কর্মসংস্থানে পড়ছে ভাটা। প্রাচীন পেশাগুলোর মধ্যে তালাচাবি মেরামতকারীরা অন্যতম। ভুলে হোক বা ইচ্ছাকৃতভাবে, যখন একটি তালার লক আটকে যায়, তখন এই তালাচাবি মিস্ত্রিদের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চার নম্বর গেটের বিপরীতে সবসময় দেখা যায় ছোট বাক্স নিয়ে বসে থাকা তালাচাবি মিস্ত্রিদের। কখনো অলস, কখনো সামান্য কাজ করে সময় পার করেন তারা।
আকবার হোসেন প্রায় ২৫ বছর ধরে তালাচাবি মিস্ত্রির কাজ করছেন। এই পেশাটি তার চাচার কাছ থেকে শিখেছেন। তিনি স্বদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এই কাজ দিয়ে পরিবার চালানো খুবই কঠিন। ইনকাম কিছুদিন ভালো হয়, আবার কিছুদিন খারাপ।
আকবরের মতো আরও ৬-৭ জন তালাচাবি মিস্ত্রি একই জায়গায় কাজ করেন। তাদের মধ্যে মোসলেম সবচেয়ে অভিজ্ঞ। তারা সবাই একই সংগ্রামের মধ্যে আছেন এবং এত বছর এই পেশার সাথে জড়িত থাকার কারণে তারা এটি ছেড়ে দিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।
তারা জানান, আয় খুবই কম, যা দিয়ে জীবন চলে না। তাই তারা কেউই তাদের সন্তান বা আত্মীয়-স্বজনদের এই পেশা শেখাতে চান না। কারণ তারা এই পেশার ভবিষ্যৎ দেখেন না।
আকবারের মতো ষাটোর্ধ তালাচাবি মিস্ত্রি আব্দুল মালেক ৪০ বছর ধরে এই পেশার সাথে জড়িত। তিনি সপ্তাহে ছয় দিন এই স্থানে বসে কাজ করেন। তিনি জানান, তালার ধরন এখন বদলে গেছে, তাই তারা অনেক আধুনিক তালা মেরামত করতে পারেন না। যখন অনেক তালা ভেঙে যায়, তখন সেগুলো ফেলে দিতে হয়, কারণ সেগুলো মেরামত করা যায় না। অনেক বাড়িতে এখন উন্নত প্রযুক্তির তালা ব্যবহার করা হচ্ছে, যার ফলে তাদের সেবার চাহিদা আরও কমে গেছে।
স্বদেশ প্রতিদিন/এনআর