
পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে নিয়ম মেনেই চলছে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসা। ফুটপাতের ছোট-বড় দোকানগুলোও ঢেকে দেওয়া হয়েছে পর্দা দিয়ে। তবে পবিত্র এই রমজান মাসেও থেমে নেই আবাসিক হোটেলগুলোর অনৈতিক ব্যবসা। বরং প্রশাসনের চোখের সামনেই অবৈধ এ কর্মকাণ্ড প্রকাশ্যে চলছে, যা জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগ রয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো করেই শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন আবাসিক হোটেলগুলোতে চলছে অসামাজিক ব্যবসা। তারা বিভিন্ন মহলকে মাসিক মাসোহারা দিয়ে শপথ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। যেখানে খদ্দেরদের সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিটি গেস্ট হাউজের জন্য থাকে বেশ কয়েকজন দালাল। যারা প্রকাশ্যে চালায় প্রচারণা, যুবসমাজকে দেখায় নানা প্রলোভন।
গোপন অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে রাস্তায় পড়ে থাকা হোটেল হিমালয় আবাসিকের একটি ভিজিটিং কার্ডের নাম্বারের দালালের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অকপটে স্বীকার করেন, রমজান মাসেও তাদের এই ব্যবসা চলছে।
তিনি বলেন, এখানে রুম পাওয়া যাবে মাত্র ১৩৫০ টাকায়। যে কাউকে নিয়ে থাকা যাবে নির্ভয়ে। আর তারা যদি রাত্রিকালীন অসামাজিক কাজের সঙ্গীর ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে এক রাতের জন্য ৩৫০০ টাকা দিতে হবে।
পুলিশ যদি ঝামেলা করে তখন কী হবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে দালাল নির্ভয়ে বলেন, 'ভাই এখানে ১০০% নিরাপদ হিমালয় গেস্ট হাউস মেন রোডের পাশে। এখানে ঝামেলা টামেলা হবে না এটা পুরাতন হোটেল, যাদের নতুন হোটেল তাদের কাগজপত্র থাকে না তাদের সমস্যা হয়। এটা ১০০% সিকিউর হোটেল ভাই।'
এদিকে একই মালিকের পরিচালনায় পদ্মা গেস্ট হাউজেও চলছে অসামাজিক ব্যবসা। হোটেলগুলোর খুব কাছাকাছি আশুলিয়া থানা থাকলেও দুটি হোটেলের মধ্যেই চলছে অসামাজিক ব্যবসা। যা থানা পুলিশের দৃষ্টিতে আসছে না। পুলিশের রহস্যজনক নিরবতার কারণে তালিকাভুক্ত প্রায় প্রতিটি গেস্ট হাউস নামক আবাসিক হোটেলগুলোতে রোজার মধ্যেও এসব অনৈতিক কার্যক্রম চালু রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার আশপাশের বেশ কিছু আবাসিক হোটেল ও গেস্ট হাউজ রয়েছে, যেগুলো মূলত অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়া হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে সাধারণত যুবতী মেয়েরা নির্দিষ্ট খদ্দেরদের কাছে বিক্রি হচ্ছেন, আর এই ব্যবসার আড়ালে চলে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড। রাত্রিকালীন সময়ে এসব হোটেলে সুকৌশলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় নারী এবং পুরুষকে। যাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বেচ্ছায় এতে অংশ নেন, আবার অনেকে নানা প্রলোভনে বা চাপে পড়ে এসব কাজ করতে বাধ্য হয়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুলিশের অল্প দূরেই এসব গেস্ট হাউজে চলছে অসামাজিক কার্যক্রম, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। পুলিশ স্রেফ অন্ধ হয়ে রয়েছে। মাদকদ্রব্য, ছিনতাই, এবং অসামাজিক কার্যকলাপের মতো অপরাধগুলো এখানে নিয়মিত হয়েই চলেছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনূর কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি স্বদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আশুলিয়া থানায় নতুন ওসি আসলে এসব যায়গায় অভিযান চালানো হবে।
স্বদেশ প্রতিদিন/এনআর