
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের বহুল আলোচিত নেতা শামীম মোল্লার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুনরায় স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।
বুধবার (১৯ মার্চ) এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি অমর্ত্য রায় ও সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবৃতি বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, তারা প্রক্টর অফিসে প্রবেশ করেও শামীম মোল্লাকে মারধর করেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার পর তার মৃত্যু ঘটে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা যথেষ্ট নয়। শামীম মোল্লার ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের মাত্র ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে এবং কিছু সাবেক শিক্ষার্থীর সনদপত্র স্থগিত করা হয়েছে, যা অপরাধের মাত্রার তুলনায় নিতান্তই হালকা শাস্তি বলে মনে করছে সংগঠনটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জলাধারে পাখি হত্যার দায়ে যেখানে ছয় মাসের বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়, সেখানে একজন শিক্ষার্থীকে নৃশংসভাবে আক্রমণ ও পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যুর ঘটনায় একই মাত্রার শাস্তি দেওয়া হয়! এটি স্পষ্ট পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত," বলেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা।
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে নেতারা বলেন, আমরা চাই, তদন্ত কমিটি যেন কোনো পক্ষের প্রভাবমুক্ত থেকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি, প্রক্টরিয়াল বডির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংগঠনটি। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রক্টরিয়াল বডি কেন তাদের অফিসে হামলাকারীদের প্রতিহত করতে পারেনি? কেন তারা শামীম মোল্লার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলো? এ প্রশ্নগুলোর জবাব পাওয়া জরুরি।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নেতারা বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের সহিংসতার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, আমরা চাই, প্রশাসন এ বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করুক এবং ভবিষ্যতে ক্যাম্পাসে নিরাপদ পরিবেশ বজায় থাকুক।
উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শামীম মোল্লাকে মারধরের পর পুলিশের হেফাজতে থাকাকালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্তদের ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করে এবং কয়েকজন সাবেক শিক্ষার্থীর সনদ স্থগিত করে।
স্বদেশ প্রতিদিন/এনআর